জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল ১০টায় মামলার রাজসাক্ষী চৌধুরী মামুনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ হাজির করা হয়।
বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে, গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে এবং মামুনকে ‘অ্যাপ্রুভার’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
প্রসিকিউশন জানিয়েছে, এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে:
উসকানিমূলক বক্তব্য ও গণহত্যা:
২০২৪ সালের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা গণভবনে আন্দোলনরত ছাত্রদের "রাজাকারের বাচ্চা" বলে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। এর প্রেক্ষিতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীরা আক্রমণ চালিয়ে দেড় হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে এবং প্রায় ২৫ হাজারকে আহত করে।
মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ:
শেখ হাসিনার নির্দেশে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের দমন করা হয়। এ নির্দেশ তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি কার্যকর করেন।
নির্মম হত্যাকাণ্ড:
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করার ঘটনায় তিনজনই অভিযুক্ত।
চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ড:
ঢাকায় চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জন নিরীহ আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা।
আশুলিয়ায় পুড়িয়ে হত্যা:
আশুলিয়ায় ছয়জনকে আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনায়ও একই তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে, এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এটি ছাড়া আরও তিনটি মামলা রয়েছে।
২ জুলাই একটি আদালত অবমাননার মামলায় তাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আরও দুটি মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ধার্য রয়েছে যথাক্রমে ১২ ও ২৪ আগস্ট।